স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ক্যান্সারে আক্রান্ত গৃহবধূ তানিয়া আক্তারকে বাঁচাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য তুলছেন তার শ্বশুর বাড়ির এলাকার লোকজন। যে যার মতো করে করছেন সাহায্য। একদল মানবিক মানুষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য তুলছেন। তঁাদের সেই ভালোবাসার হাতে তুলে দিচ্ছেন যে যা পারছেন চাল কিংবা নগদ অর্থ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের হাওড়ার চর গ্রামের সবুজ মিয়ার স্ত্রী তানিয়া।
তানিয়ার ডান পায়ে টিউমার হওয়ায় ইতিমধ্যেই তার ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে। পরে এই টিউমার থেকেই তার পায়ে ক্যান্সার হয়। মরণব্যাধি ক্যান্সার থেকে বঁাচতে তানিয়ার আরো চিকিৎসার দরকার। কিন্তু চিকিৎসার সেই আর্থিক সামর্থ নেই তানিয়ার পরিবারের। এমন অবস্থায় সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছেন তানিয়ার শশুর বাড়ির এলাকার লোকজন।
তানিয়ার স্বামী সবুজ মিয়া পেশায় অটোরিকশা চালক। তার পক্ষে স্ত্রীর চিকিৎসার ব্যয়ভার কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছিল না বলে সেটি দিয়ে বর্তায় তানিয়ার বড় বোন খাদিজা আক্তারের উপর। ঢাকায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে খাদিজা আক্তারও অর্থের সংকুলান করতে পারছিলেন না। বাধ্য হয়েই হাসপাতাল থেকে বোনকে নিয়ে আসেন। এখন বাসা থেকে নিয়েও চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না টাকার অভাবে।
উপজেলার রাজেন্দ্রপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সাধারন সম্পাদক মোঃ রোকন উদ্দিন লিটন জানান, গ্রামের ১০ জন মিলে ঘরে ঘরে যাচ্ছি। যে যা পারছেন আমাদেরকে দিচ্ছেন তানিয়ার সহযোগিতার জন্য। নোয়াব মিয়া নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত ড্রাইভারের কাছে গেলে তিনি ২৫০ টাকা দেন। এরপর একাধিক খেটে খাওয়া মানুষ চাল দিয়ে সহায়তা করেন। পার্শ্ববর্তী আদমপুর গ্রাম থেকে তিন হাজার টাকা ও প্রায় ২০ কেজি চাল উঠানো হয়। সকলের সহযোগিতায় আমরা গ্রামের গৃহবধূকে বাঁচাতে চাই।
তানিয়ার স্বামী সবুজ মিয়া বলেন, ‘আমার পক্ষে চিকিৎসা করানো কোনোভাবেই সম্ভব ছিলো না। এজন্য তার বোন ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখন তিনিও কোনোভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকেও আর ধার-দেনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
তানিয়ার বোন খাদিজা জানান, ১৮ আগস্ট তানিয়াকে প্রথমে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয়ে ক্যান্সার হাসপাতালে। সেখানেও চিকিৎসা করতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। এক পর্যায়ে প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তার দেখিয়ে আহসান ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতেই প্রয়োজন হয় প্রায় ৪০/৫০ হাজার টাকা। অপারেশন শেষে প্রায় ৮০ হাজার টাকা বিল আসে। বিল দিতে না পারায় রোগীকে তিন-চারদিন বেশি রাখতে হয় হাসপাতালে। এক পর্যায়ে আত্মীয় স্বজন ও স্বামীর কর্মস্থলের মালিকের কাছ থেকে ধার নিয়ে বিল পরিশোধ করে বোনকে বাসায় নিয়ে আসি। এখন বাসা থেকে নিয়ে প্রতিদিন চিকিৎসা করাতেও যে টাকার প্রয়োজন সেটিও হাতে নেই। আবার অপারেশনের জন্য যে টাকা প্রয়োজন সেটাও যে কোথাও পাবো বুঝতে পারছি না। আমি আমার বোনকে বাঁচাতে চাই।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply